
দিব্যায়ন পাল, আগামী কলরব: রক্তিম এবং সুশান্ত খুব ভালো বন্ধু, একসাথেই ছোট থেকে বড় হয়েছে। এক স্কুল-কলেজে পড়েছে।
কলেজে পড়াকালীন রক্তিম অকস্মাৎ গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায়। তারপর থেকেই সুশান্ত একা, কোনোদিন ভাবেনি তাকে তার প্রিয় বন্ধুকে ছাড়াই থাকতে হবে।
একদিন সে তার এক পুরোনো বন্ধু রাজদীপ এর কাছে জানল সে পরলোকতত্ত্ব বিষয়ে চর্চা করে। পরলোক জগতের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হয় সে। সুশান্ত তাকে বলে সে একবার রক্তিম এর সাথে কথা বলতে চায়। রাজদীপ সুশান্তর কথা শুনে রাজি হল, কিন্তু সতর্ক করল তার কথা শুনে কাজ করতে হবে। সুশান্ত যদি কিছু ভুল সিদ্ধান্ত নেয় নিজেই অসুবিধায় পড়বে। প্ল্যানচেট চলাকালীন অনেকক্ষণ ধরে কিছু না হওয়ায় রাজদীপ সুশান্তকে বলে যদি রক্তিম এর আত্মার আসার ইচ্ছা হত, ত সে এতক্ষণে চলে আসত।
সুশান্ত হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে আসে। রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে সময়মত।
মধ্যরাতে হঠাৎ করে সুশান্তের ঘরে ঠান্ডা হাওয়া ঢুকতে লাগল। একে শীতকাল, তারপর ঠান্ডা হাওয়া! সুশান্তর ঘুম ভেঙে গেল। সে বিছানা থেকে উঠে জানালা বন্ধ করল। কিন্তু তখনই তার মনে পড়ল সে তো জানলা বন্ধ করেই ঘুমিয়েছে! সে ভাবল হাওয়ায় হয়তো কোনোভাবে জানলা খুলে গেছে। সুশান্ত জল খেয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়ল। কয়েক মিনিট সবে– সুশান্তর ঘুমের মধ্যেই মনে হল ওর ঘরের দরজা নিজে থেকে খুলে গিয়ে ঘরের মধ্যে একটি কালো ছায়া প্রবেশ করল। সুশান্তর খাটের সামনে এগিয়ে এল ছায়াটি। ঘুমের মধ্যে অস্বস্তি লাগতে শুরু করল, কিছুক্ষণ পরে তার ঘুম ভেঙে গেল। চোখ খুলেই সুশান্ত সামনে দেখতে পেল কালো ছায়াটিকে। ছায়া তার দিকে জ্বলন্ত চোখে তাকিয়ে আছে। সুশান্ত দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করল, কিন্তু তার পা অসাড় হয়ে গেল। সুশান্ত তার দিকে তাকিয়ে থাকতে পারল না, অজ্ঞান হয়ে গেল।
পরেরদিন অনেক বেলাতেও বাড়ির লোকের ডাকাডাকিতে দরজা না খুললে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পাওয়া গেল সুশান্তের মৃতদেহ। পরে জানা গেল সুশান্তের হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে গিয়ে মৃত্যু হয়। আশ্চর্যের ব্যাপার হল, সুশান্তর কোনোরকম হার্টজনিত রোগই ছিল না!
কিন্তু প্রশ্ন হল, গতরাতে আদতেই রক্তিমের আত্মা এসেছিল, না কি অন্য কোনো অশুভ আত্মা?